#ভূত_চতুর্দশী #Bhoot_Choturdoshi
আমাদের বাঙালিদের তো আর হ্যালোউইন হয় না , কিন্তু আমাদের ও আছে এক চিরন্তন উৎসব … আজকে বাঙালিদের ভূত চতুর্দশী। হিন্দু পুরাণে থাকলেও ভূত চতুর্দশী একান্তই বাঙালির উৎসব বলা চলে। কারণ বাঙালি ছাড়া অন্য অঞ্চলের হিন্দুদের মধ্যে ভূত চতুর্দশী পালন করার প্রচলন তেমন নেই। দীপান্বিতা অমাবস্যার আগে চতুর্দশী তিথিতে হিন্দু মতে ভূত চতুর্দশী পালন করা হয়। হিন্দু মতে বিশ্বাস করা হয় যে এদিন মৃত পূর্ব পুরুষরা মর্ত্যে নেমে আসেন৷ তাঁদের খুশি করতে ও অতৃপ্ত আত্মাদের অভিশাপ থেকে বাঁচতে এদিন নানা আচার পালন করার প্রথা রয়েছে। ভূত চতুর্দশী নিয়ে পুরাণে যে গল্প পাওয়া যায় তা হল — দানবরাজ বলি যখন স্বর্গ, মর্ত্য ও পাতাল দখল করে নিলেন তখন নির্বিচারে হত্যাযজ্ঞ শুরু করল রাক্ষসরা। এই আক্রোশ থেকে পার পেলেন না দেবতারাও। বলির তাণ্ডব ঠেকাতে দেবগুরু বৃহস্পতি ভগবান বিষ্ণুকে একটি উপায় বাতলে দিলেন। বামনের ছদ্মবেশে তখন নেমে এলেন শ্রীবিষ্ণু, তিন পা সমান জমি ভিক্ষা চাইলেন রাজা বলির কাছে। দানবরাজ কিন্তু শুরুতেই বুঝেছিলেন যে এই বামন আর কেউ নন, স্বয়ং বিষ্ণু। কিন্তু এরপরও তিনি রাজি হলেন চুক্তিতে। দুই পা দিয়ে স্বর্গ ও মর্ত্য দখল করে ফেললেন বিষ্ণু। এরপর নাভি থেকে বের হয়ে এলো তাঁর তৃতীয় পা, যা রাখলেন বলি রাজার মাথার উপর। সঙ্গে সঙ্গেই পাতালে নেমে গেলেন দানবরাজ বলি। সেই থেকে পাতালই হলো তাঁর আবাস। তবে জেনেশুনে জমি দান করায় এবং ভগবানের প্রতি আনুগত্য স্বীকার করায় বলিকে কিছু করুণাও করলেন বিষ্ণু। প্রতি বছর পৃথিবীতে তাঁর পুজো হবে বলে আশীর্বাদ করলেন তিনি। সেই থেকে কালীপুজোর আগের রাতে বলি রাজা পাতাল থেকে উঠে আসেন পুজো নিতে। সহচর হিসেবে থাকে শত সহস্র ভূত, প্রেতাত্মা এবং অশরীরী! সনাতন ধর্ম মতে এই রাতে মর্ত্যে নেমে আসেন আমাদের ১৪ পুরুষরা। ভূত চতুর্দশীতে তাই গৃহস্থ বাড়িতে সন্ধের পর ১৪ প্রদীপ জ্বালানোর রীতি আছে। আবার অনেকে মনে করেন অশুভ শক্তি দূর করতে এই দিন সারা রাত আলো জ্বালিয়ে রাখা হয়। পরদিন দীপান্বিতা অমাবস্যায় অনেকে অলক্ষ্মী বিদায় করতে লক্ষ্মী পুজো করেন।
ভূত চতুর্দশীতে বেশ কিছু আচার পালন করার প্রথা রয়েছে হিন্দু মতে। তার মধ্যে অন্যতম হল ১৪ শাক খাওয়া। হিন্দুরা বিশ্বাস করে যে মৃত্যুর পর দেহ পঞ্চভূতে বিলীন হয়ে যায়। তাই আকাশ, মাটি, জল, হাওয়া, অগ্নি প্রকৃতির এই পাঁচ উপাদানের মধ্যেই মিশে থাকেন আমাদের পূর্বপুরুষরা। প্রকৃতির কোল থেকে তুলে আনা ১৪ প্রকার শাক খেয়ে তাই তারা পরলোকগত ১৪ পুরুষের উদ্দেশ্যে উত্সর্গ করে এই দিনটিকে।ওল, পুঁই, বেতো, সর্ষে, কালকাসুন্দে, নিম, জয়ন্তী, শাঞ্চে, হিলঞ্চ, পলতা, শৌলফ, গুলঞ্চ, ভাঁটপাতা ও শুষণী- এই ১৪ রকমের শাক একসঙ্গে রান্না করার প্রথা রয়েছে ভূত চতুর্দশীতে। ১৪ শাক ধোয়ার জন্য যে জল ব্যবহার করা হয়, তা ছিটিয়ে দেওয়া হয় বাড়ির অন্ধকার কোণগুলোতে। দুপুরে ১৪ শাক ভাজা খেয়ে, সন্ধ্যায় ১৪ প্
রদীপ জ্বালিয়ে, দরজায় ১৪ ফোঁটা দেওয়ার এই রেওয়াজ বহুদিনের।
— feeling ভুতের রাজা দিল বর.
No Comment! Be the first one.