একটা ছোট কবিতা। সত্যি কথা বলতে, কে লিখেছেন, নিজেও জানি না, কয়েকদিন আগে, ভিয়েতনাম নিয়ে পড়াশোনা করতে গিয়ে, হঠাৎই এই কবিতাটা চোখে পড়ে যায়। আর সাথে সাথে একরাশ কৈশোরের স্মৃতি ছাপিয়ে ওঠে বুকের মধ্যে। তিরিশ বছর আগে, আমরা লালই ভালবাসতাম, লোক দেখানো সুবিধাবাদী লাল নয়, বেশ ঘন টকটকে লাল। ধীরে ধীরে অবশ্য কর্মসুত্রে আমরা হয়ে গেছি সবাই অন্য রঙের… এখন তো আমার আঙুল কেটে গেলেও, রক্ত পরে অলিভ-গ্রিন। কবিটা কপি-পেস্ট করে দিলাম, বাচ্চারা হয়তো হাসবে – এই নীল সবুজ আর গেরুয়ার জমানায়, পাগলরাই লালের কথা বলে; একটু বুড়োরা হয়তো সেই সময়ের সেন্টিমেন্টটা বুঝবে।
আমি চিৎকার করে বধিরকে বলে দেবো, লাল-
আমি লাল ভালোবাসি লাল। টুকটুকে লাল;
স্বস্নিগদ্ধ রঙ্গন, অবুঝ পলাশের লাল,
শেষ বিকালের বিপ্লবী আকাশের মত আমি লাল ভালোবাসি।
জীবন্ত ধমনীতে বহমান রক্তকুঞ্জের কুলুকুলু ধারার মতো-
জাদুঘরে রাখা প্রীতিলতার গায়ে বিদ্ধ বুলেটের লাল,
বক্ষব্যাধিতে আক্রান্তের বমি গন্ধের মত লাল
আমি লাল ভালোবাসি লাল।
পিচ পথে হড়হড়িয়ে ঢেলে দেয়া আসাদের বুকের মত লাল;
ডাস্টবিনে ফেলে দেয়া অবাঞ্চিত ভ্রুনের মত লাল,
পিঞ্জরে বেঁধে রাখা মাদুলির মতো বক্রহীন,
উন্মাদের খোলা মাথার ঘেলুর লাল, আমি লাল ভালোবাসি।
বাড়ি থেকে ডেকে নিয়ে, অবাধ্য কমরেডের বুকে-
বসিয়ে দেয়া ক্রস বুলেটের মত লাল।
তিয়েনআমেনে বীরদর্পে কাপানো ট্যাংকের চেইনের মতো,
বিশ্বযুদ্ধে নিহত, পচা বাসি সেনার মাংসের মত লাল
আমি লাল ভালোবাসি লাল।
বহমান ইউফ্রেটিসের মোহনা বৃত্ত, মৃতের শরীরের লাল,
ফায়ারিং স্কোয়াডে ঘুমন্ত বিপ্লবীর বুক,
সিগারেটের আগুনে পোড়ানো ধর্ষিতার নিতম্বের চেয়ে আরো লাল।
বিপ্লব লাল, রক্ত লাল, সবুজ ও এখন লাল,
পোকা মারা বিষ লাল, বুড়ো হাতির দাঁত লাল,
সাদা রং লাল, কালো রং লাল, এখন সব লাল। বিপ্লবী লাল,
স্যালুট লাল, সেনার বুটের তলা ও লাল।
তার চেয়ে ভালোবাসি আমি লাল,
আমি লাল ভালোবাসি লাল।
উৎসর্গঃ ভিয়েতনামের লাল আগস্ট বিপ্লবের সেনানীদের।
No Comment! Be the first one.